Author name: Abdur Rahman Nur

NGO চাকরি
ব্লগ

ক্ষুদ্রঋণ এনজিওতে ক্যারিয়ার গড়ার আগে যেসব বিষয় ভাবা জরুরি

NGO চাকরি অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের কাজের স্তর ‘পিরামিড’এর ন্যায়, যেখানে পিরামিডের সর্বোচ্চ চূড়ায় থাকেন তার নির্বাহী প্রধান। বাংলাদেশে এনজিও বা এমএফআইগুলি প্রধাণত: পিরামিড সজ্জায় কাজ করে থাকে। ক্ষুদ্রঋণ সংস্থাগুলি’র প্রধান হন একজন নির্বাহী পরিচালক বা এক্সিকিউটিভ ডিরেকটর এবং একেবারে বেসমেন্টের গাঁথুনী তৈরী করেন মাঠকর্মী বা ফিল্ডঅফিসার (Field Officer) বা ক্রেডিট অফিসার (Credit Officer), যে নামেই ডাকুন না কেন।  NGO চাকরি ক্ষুদ্রঋণ এনজিও’তে মাঠকর্মীর ভূমিকা অপরিসীম: ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম পরিচালনাকারী এনজিওগুলি’র ক্ষুদ্রতম ইউনিট হলো ‘মাঠকর্মী’ বা ক্রেডিটঅফিসার।পজিশন বা নামটা ছোট শোনালেও একজন মাঠকর্মী’র কাজের পরিধি কিন্তু বিস্তৃত। কোনরকমে নাস্তাটা শেষ করেই উনি সকাল সকাল ফিল্ডে চলে যান। সমিতিতে এসে তড়িৎ সকলের সাথে কুশল বিনিময় করেই লেগে পড়েন ওই সমিতি’র মূল কর্মসূচীতে – ঋন ও সঞ্চয়ের কিস্তি উত্তোলনে। সবাই কি তাঁর হাতে ঝটপট নগদ টাকা এনে দিয়ে কিস্তি শেষ করে চলে যান? অনেক সময় তা সত্য হলেও সবাই কিন্তু, কিস্তি’র টাকাটা নিয়মিত পরিশোধ করতে পারেন না। একজন মাঠকর্মী দিনে অন্তত: ২ থেকে ৪টা সমিতিতে যান ঋণকর্মসূচী পরিচালনা করার নিমিত্তে। এই কাজগুলো পরিচালনা করে তাকে আবার ছুটতে হয় বকেয়া সদস্যদের বাড়ি বাড়ি বা ব্যবসা’র স্থানে – অনুনয়-বিনয় অথবা শক্ত হয়ে তাকে ঋণের কিস্তি আদায় করতে হয়, রোদ-বৃষ্টিকে থোড়াই কেয়ার করে! সবশেষে ব্রাঞ্চে বা শাখায় এসে হিসাব মিলাতে হয় – হাতে নগদের সাথে সমিতির মূল হিসাবের। NGO চাকরি অনেক সংস্থায় এসকল কাজ করতে গিয়ে একজন কর্মী’র রাত আটটা-দশটা হয়ে যাওয়াটাও অস্বাভাবিক না। মূলত: মাঠকর্মী’র সততা, দায়িত্বপূর্ণ আচরণ ও কর্মদক্ষতার উপর ওই সংস্থা’র ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের সফলতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। এখন প্রশ্ন হলো, ঋণকার্যক্রম এনজিও’তে ক্যারিয়ার তৈরী করতে হলে আপনি কোন বিষয়গুলিকে বিবেচনায় নিবেন? শুধুমাত্র ‘বেতন’টাই কি সব, নাকি আরো কিছু বিষয় বিবেচনায় নিবেন সংস্থা নির্বাচনে? চলুন দেখে নেই। কাজের পরিবেশ: বাংলা ব্যাকরণে পড়েছেন নিশ্চয়ই ‘কর্তার ইচ্ছায় কর্ম সম্পাদন’ হয়। কর্তা যেভাবে তাঁর সংস্থাকে পরিচালিত করতে চান, মূলত: কর্মপরিবেশ তারই প্রতিফলন। উনি যদি ‘বদরাগী’ হন, আপনার ইমিডিয়েট উপরের একাউন্টেন্ট বা শাখা ব্যবস্থাপক’ও তারই প্রতিরূপ হবার সম্ভাবনা বেশী। আপনার ইমিডিয়েট বস হলেন শাখা ব্যবস্থাপক অথবা, কোথাও কোথাও সহকারী শাখা ব্যবস্থাপক অথবা একাউন্টেন্ট – তাঁর দৈনন্দিন আচরণ ও ব্যবহার আপনার কাজের গতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে বাধ্য। অনেক বস আছেন, অধ:স্তনের কাজ শেষ হয়ে গেলেও, তাঁকে অফিস থেকে বের হতে দেখলে তেলে-বেগুনে জ্বলতে থাকেন। এই টাইপের বসের কাছে কাজের অগ্রগতি মানেই হলো অধিক সময়ে অফিসে ব্যয় করা। অনেক কর্মীই দিনের পর দিন অধিক সময়ে অফিসে ব্যয় করে দ্রুতই শারীরিক ও মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্থ হয়ে পড়েন। ফলে, মূল যে কাজ ঋণকার্যক্রম, তা দ্রুতই ব্যাঘাতগ্রস্থ হয়। আবার, এই টাইপের বসরা কর্মীদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক বা সামাজিক প্রয়োজনে ছুটি নেওয়াটাও সহ্য করতে পারেন না। তাঁরা মনে করেন, চাকরি মানেই রাতের ঘুম ছাড়া বাকি সময়টা অফিসে ব্যয় করতে হবে – এখানেই সমস্ত ধ্যান-জ্ঞান-কর্মযজ্ঞ করে যেতে হবে। একজন কর্মী’রও ব্যক্তিগত জীবন-পরিবার-সমাজ থাকতে পারে অথবা, অফিসের বাইরে বিভিন্ন প্রয়োজনে তাঁর ‘ছুটি’র প্রয়োজন হতে পারে তা এককথায় বেমালুম ভুলে যান এধরনের বস’রা। এসব লোকের আন্ডারে কাজ করা কিন্তু সহজ নয়। ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালান্স যে বর্তমান দুনিয়ায় কর্মপরিবেশে একটি বহুল প্রচলিত শব্দ, কোন কোন সংস্থায় আপনি তা নাও পেতে পারেন। সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা ও ট্রেনিং–এর অভাব: সুনির্দিষ্ট কর্মপন্থা অবলম্বন না করার কারনে অনেক সংস্থার ঋণকার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়ে। মনে রাখতে হবে, এদেশে ঋণ নেয়ার মানুষের অভাব নাই, কিন্তু, অনেকেই নানাবিধ কারনে সময়মতো কিস্তি পরিশোধে ব্যর্থ হন। ঋণ কার্যক্রমে অন্যতম পন্থা হলো সঠিক দিকনির্দেশনা – কোন ধরনের উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে কাকে লোন দেয়া যাবে তা সংস্থা কর্তৃক সঠিকভাবে নির্নীত হতে হবে। ঋণ আদায়ে কি কি পন্থা অবলম্বন করতে হবে, ঋণের ক্লাসিফিকেশন ঠিকমতো হচ্ছে কিনা, ক্লাসিফিকেশন অনুযায়ী ফলোআপ ব্যবস্থাপনা কি কি হতে হবে – তা অবশ্যই সংস্থা’র কার্যক্রমে লিপিবদ্ধ থাকতে হবে। শুধু লেখা থাকলেই হবে না সময় সময় এই বিষয়গুলি নিয়ে অফিসে আলোচনা ও ট্রেনিং-এর ব্যবস্থা থাকতে হবে। এগুলি ব্যতিরেকে কেবলমাত্র ঋণকর্মী বা মাঠকর্মী’র উপর ‘টার্গেট’ ধরিয়ে দিলে তা আসল উদ্দেশ্য সাধনে ব্যর্থ হতে বাধ্য। ‘এনালগ’কে না বলুন: যদি বর্তমান সময়কে ‘ডিজিটাল’ বলি, তাহলে অটোমেশন না থাকাটাকে ‘এনালগ’ বলতে পারি, তাই না? বর্তমান যুগ যেভাবে এগিয়ে যাচ্ছে, ‘এনালগ’ পদ্ধতিতে ম্যানুয়ালী ঋণ-সঞ্চয়ের খাতা-কলমের হিসাব আর কতোদিনই বা সম্ভব হবে? অনেক সংস্থাই তাদের ঋনকার্যক্রম স্বয়ংক্রিয় করার প্রয়াসে ইতোমধ্যে সফটওয়্যার পরিষেবা গ্রহণ করেছেন। অনেক সংস্থা সফটওয়্যার অটোমেশনের কথা চিন্তা-ভাবনা শুরু করেছেন। আর বাকি’রা বসে আছেন খাতা-কলমের সেই যুগে! আপনাকে বেছে নিতে হবে অটোমেশনে যাবেন নাকি এনালগে যাবেন! আর হ্যাঁ, বাজারে তো অনেকগুলি ক্ষুদ্রঋণ ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার আছে ঋণ কার্যক্রম পরিচালনার জন্য। সবগুলোর হিসাব-নিকাশ এবং সেবার মান কিন্তু এক নয়। অনেকসময়ই সফটওয়্যার নিয়ে সফটওয়্যার বাগ বা ত্রুটি’র কারনে কাঙ্খিত সেবা পাওয়া যায় না – হিসাব মিলানোটা হয়ে যায় ‘মারণফাঁদ’। ঋনকার্যক্রম পরিচালনাকারী সফটওয়্যার এদেশে প্রচলিত অন্যান্য সফটওয়্যার পরিষেবা’র তুলনায় কিছুটা জটিল ও ভিন্নতর। ফলশ্রুতিতে অনেক প্রতিষ্ঠানই এই সফটওয়্যার কার্যক্রম শুরু করলেও শেষমেষ ঠিকমতো শামাল দিতে পারেন না। জটিল বাগের (Bug) কারনে, দিনের পর দিন সংস্থার ঋণকার্যক্রম ভুল হিসাব মেনেই চালিয়ে যেতে হয় – যার মাশুল দিতে হয় যারা মাঠপর্যায়ে ঋণকার্যক্রমে জড়িত থাকেন। বাজারের যেনতেন ‘সস্তা’ সফটওয়্যার ক্রয় করে সংস্থার কর্মীদের জন্য বয়ে আনে প্রাত্যহিক দু:স্বপ্নের ভয়াবহতা – রাতের পর রাত জেগেও ঋণ-সঞ্চয়ের হিসাব মিলানোটা হয়ে ওঠে কষ্টকর। ভাল মানের ক্ষুদ্রঋণ ম্যানেজমেন্ট সফটওয়্যার সহজেই এই সমস্যার সমাধান দিতে পারে। সংস্থা’র এই বিষয়টাও আগে-ভাগে জেনে রাখাটা এবং সে অনুযায়ী সংস্থা নির্বাচন করাটা আপনার মানসিক স্বাস্থ্য ও সর্বোপরী ক্যারিয়ারের জন্য মঙ্গলজনক বলে মনে করি।   খোঁজ নিবেন কিভাবে? আপনি যদি ক্যারিয়ার (এনজিও) শুরু করতে চান অথবা, ক্যারিয়ারের মধ্যপথে সংস্থা পরিবর্তনের কথা চিন্তা করে থাকেন তবে উপরের বিষয়গুলি বিবেচনায় নিয়ে পথ চলার চেষ্টা করুন। এখন প্রশ্ন হলো, সংস্থা সম্পর্কে তথ্য কোথায় পাবেন? অনেকভাবেই আমরা একটা প্রতিষ্ঠান, তাদের কর্মপরিবেশ, কাজের মান, সংস্থা’র স্টাফদের মূল্যায়ন পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা পেতে পারি। একটা বড় মাধ্যম হলো ইন্টারনেট ভিত্তিক বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যম – ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপ, পেজ, লিংকডইন, ওয়েবপেজ সহ আরো বিভিন্ন ভাবে আপনি একটা সংস্থা সম্পর্কে কিছুটা ধারনা পেতে পারেন। এরপরেও আপনি ঐ সংস্থায় কর্মরত (অতীতে বা বর্তমানে) স্টাফদের সাথে কথা বলে সংস্থা সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। NGO চাকরি এতকিছু চিন্তা-ভাবনার পরেও যদি আপনি ‘ফ্রম ফায়ারপ্যান টু ফায়ার’-এ পড়ে যান, নতুন আরেকটি সংস্থাকে বেছে নেয়ার স্বাধীনতা তো আপনার থাকছেই… লেখকঃ আ.ই মুকসিত (এক্স ব্যাংকার)

মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রাম
ব্লগ

গ্রুপভিত্তিক মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রাম:বাইপ্রোডাক্টের গুরুত্ব

গ্রুপভিত্তিক মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রাম বাইপ্রোডাক্টের গুরুত্ব গ্রামীন ব্যাংকের মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রাম চালু হয় মহিলাদের গ্রুপভিত্তিক ঋণদান কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে। কোলাটেরাল বা জামানতবিহীন এই ঋণে একের দায়ে গ্রুপের অন্য সদস্যদেরও অলিখিতভাবে একাউন্টেবল করা হয়। যাদেরকে প্রচলিত পদ্ধতি ঋণ পাবার অযোগ্য মনে করেছিলে, কালের পরিক্রমায় তারাই হয়ে ওঠে এদেশের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য ঋণী (Debtor)। এদেশে ব্যাংকব্যবস্থাপনায় যেখানে খেলাপী ঋণের পরিমান প্রায় এক তৃতীয়াংশ, জামানতবিহীন এসকল ঋণী’র কাছ থেকে ঋণ ফেরতের হার পঁচানব্বই শতাংশ’র বেশী। গ্রামীন ব্যাংকের গ্রুপভিত্তিক ক্ষুদ্রঋণ ব্যবস্থাপনার এ মডেল দ্রুতই ব্র্যাক, আশা সহ আরো সহস্রাধিক এনজিও’কে আকৃষ্ট করে। ছড়িয়ে পড়ে গ্রাম থেকে শহরের আনাচে-কানাচে। গ্রামীন ব্যাংক ও তার প্রতিষ্ঠাতা ড: মুহম্মদ ইউনুসকে এনে দেয় নোবেল শান্তি পুরষ্কার।  ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচীর এই আখ্যানে প্রচলিত ঋণ ও সঞ্চয় কার্যক্রমের গল্পটি নতুন না। এবং এই লেখার উদ্দেশ্যও ঋণ প্রাপ্তি বা কিস্তি প্রদানের তথ্যে নিহিত নয়।  গ্রুপমিটিং – সমিতি বা গ্রুপভিত্তিক মাইক্রো-ক্রেডিট প্রোগ্রামের অন্যতম অংশ: গ্রামীন ব্যাংকের আদলে এদেশে কোলেটরাল বা জামানতবিহীন ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমের যে বিপ্লব ঘটেছিলো তা ছিলো মূলত: গ্রুপলেন্ডিং বা সমিতিভিত্তিক ঋণ কার্যক্রম। প্রাথমিকভাবে এখানে পাঁচজন সদস্য’কে নির্বাচিত করে একটা গ্রুপ গঠন করা হয়েছিল, যাদের ঋণফেরতের ধরনের উপর ভিত্তি করে সদস্য বৃদ্ধি-হ্রাস সহ ঋণের পরবর্তী দফার পরিমানও নির্ভর করতো। উল্লেখ্য যে, গ্রুপভিত্তিক এই ঋণ কার্যক্রমের মূল বেনেফিশায়ারি হলো নারী। একজন প্রশিক্ষিত ঋণকর্মী (Credit Officer) বা মাঠকর্মী (Field Officer) সাপ্তাহিক সমিতি মিটিং-এ ঋণের কিস্তি, সঞ্চয়ের কিস্তি আদায়, প্রাপ্ত ঋণের ব্যবহার, ঋণলব্ধ প্রকল্পের বর্তমান অবস্থা, ব্যবসা সংক্রান্ত পরামর্শ ছাড়াও আরো কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা বা পরামর্শ দিয়ে থাকেন। তাঁর এই আলোচ্যসূচীর মধ্যে স্থান পায় সামাজিক দায়বদ্ধতা, পারিবারিক বিভিন্ন পরামর্শ, মাতৃমঙ্গল, মহিলা ও শিশুসহ সাধারন স্বাস্থ্যগত পরামর্শ। গ্রাম ও শহরের অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর জনপদ ক্ষুদ্রঋন কর্মসূচীর প্রধানতম উপকারভোগী। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রে আমাদের দেশে মহিলারা তাঁদের পরিবারে পুরুষদের অধিনস্ত – নিম্নবিত্ত বা নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারে এই চিত্রটি আরো বেশী সত্য। অশিক্ষা বা কুশিক্ষার প্রভাবে সাধারণ দরিদ্র পরিবারে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষা বা জ্ঞানের প্রবাহ অপ্রতুল। এমনতর পরিস্থিতিতে একজন প্রশিক্ষিত মাঠকর্মীর বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্যগত পরামর্শ গ্রুপের সদস্যদের জন্য অনেকক্ষেত্রেই দারুন উপকার বয়ে আনে। একজন অভিজ্ঞ মাঠকর্মী শুধু স্বাস্থ্যগত পরামর্শ দিয়েই ক্ষান্ত হোন না, উনি সদস্যদেরকে তার ব্যবহারিক দিকনির্দেশনা, পরিষেবা প্রাপ্তি’র স্থান-কাল-খরচ সহ আনুষঙ্গিক অনেক বিষয়েই পরামর্শ দিয়ে থাকেন। দরিদ্র এই নারীকূল, যারা শিশুকাল থেকে পারিবারিক ও সামাজিক বঞ্চনার শিকার, সামাজিকভাবে তুলনামূলক বিচ্ছিন্ন (Social Exclusion), শিক্ষার আলো যাকে কোনোভাবেই প্রভাবিত করতে পারে নাই, তাঁদের জন্য এই নিবেদিত পরামর্শ অনেকক্ষেত্রেই ‘জীবন রক্ষাকারী’ (Life Saving) হিসাবে পরিগণিত হয়। এখানে গ্রুপের অন্যান্য অভিজ্ঞ ও পুরাতন সদস্যাদের ভূমিকাও অনস্বীকার্য – তাঁরা তাঁদের বয়সজনিত অভিজ্ঞতা ও ব্যবহারিক জ্ঞান সাপ্তাহিক গ্রুপ মিটিংগুলিতে আলোচনা করে থাকেন, যার সুফল পান বয়সে নবীন ও অনভিজ্ঞ সদস্যরা।  বাইপ্রোডাক্ট: আমরা সবাই জানি যে, ক্রুডওয়েল রিফাইন করে পাওয়া যায় পেট্রল, ডিজেল, কেরোসিন ও জেটফুয়েল যা জ্বালানী হিসাবে ব্যবহৃত হয়। কিন্তু, এটা কতজন জানেন যে, দুনিয়ার প্লাস্টিক ইন্ডাস্ট্রি’র কাঁচামালও কিন্তু পেট্রোলিয়াম শিল্প থেকেই আসে। প্লাষ্টিক ছাড়াও রাবার, টায়ার, সিনথ্যাটিক ফাইবার ইত্যাদির উৎস কিন্তু ক্রুডওয়েল বা পেট্রোলিয়াম ইন্ডাস্ট্রি। আমরা আজ ক্ষুদ্রঋণের ‘বাইপ্রোডাক্ট’র গল্প করবো, যেখানে ঋন সুবিধা ছাড়াও এমনকতগুলি বাইপ্রোডাক্ট ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রমে প্রতিনিয়ত উৎপাদিত হচ্ছে যা আমাদের মতো জনবহুল দরিদ্র দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিরাট ভূমিকা পালন করে আসছে।    আসিয়া আক্তারের গল্প: শিবগঞ্চের প্রত্যন্ত গ্রামের মেয়ে আসিয়া আক্তার। দিনমজুর বাবার পাঁচ (৫) সন্তানের মধ্যে আসিয়া আক্তারের সিরিয়াল হলো চার (৪)। একমাত্র ভাই আসগর আলীর সিরিয়াল হলো পাঁচ (৫)। বুঝতেই পারছেন কি ‘কদরে’ (!) আসিয়া আক্তার বাবা-মা’র সংসারে বড় হয়েছেন! কোনরকমে ‘বড়’ হয়েছে আসিয়া – ঋতুচক্রের আগমনে আসিয়া’কে স্বামী’র বাড়িতে স্থানান্তরে একরকম হন্যে হয়েই বাবা-মা দিনাতিপাত করেছেন। তাই, দরিদ্য রিকশাওয়ালা মজনু মিয়া’র ঘরে এসে পেটের টানাপোড়ন না মিটলেও মানসিক দৈন্যতার হাহাকার যেনো আনুপাতিক হারে অনেকটাই কমে গিয়েছিলো। বিয়ের বছর যেতে না যেতেই আসিয়া হয়ে পড়েন ‘প্রেগনেন্ট’ – কিশোরী আসিয়া কিছু বুঝে ওঠার আগেই সংসার জিবনের জটিল ও কঠিন জোয়াল নিতে একরকম বাধ্য হন। অনাগত সন্তানের প্রত্যাশায় যুবক মজনু মিয়া আনন্দে দিনাতিপাত করতে থাকেন। স্বামীর খুশী দেখে, আসিয়াও খুশী। অপুষ্ট আসিয়া বস্তিতে থাকলেও, বস্তি’র আর দশটা পরিবারের সাথে এখনো অতটা ‘ফ্রি’ হতে পারে নাই। বিয়ের পরের প্রথম দিনগুলি’র মতো গতর খাটিয়ে কাজের অভ্যাস, প্রেগনেন্সি’র চার মাসেও চলমান রয়েছে। শরীরের ভেতর যে আরেকটি শরীর বেড়ে উঠছে, তার দিকেও যে খেয়াল করতে হবে, দু’মুঠো অন্ন যে আসিয়া’কে বেশী পেতেই হবে – কথাগুলি কে বলবে? এর ওর সাথে পরামর্শেরও তো কোনো সুযোগ আসিয়া পাচ্ছে না। আচ্ছা আসিয়া’র মা কি জানে এসব ব্যাপারগুলি – বলতে পারতো? কি জানি – আসিয়া তো বিয়ের পরে বাবা-মা’র কাছে একবারও ফেরত যায়নি। মজনু মিয়া’র সংসারে অভাব থাকলেও, মানুষ হিসাবে মজনু মিয়া ওতো খারাপ না – তাকে একরকম যত্ন-আত্তি’র মাঝেই রেখেছে, তাঁর সামর্থের মধ্যে। আসিয়া বুঝতেই পারলো না, পেটের অনাগত জীবন কখন যে ‘মিসক্যারেজ’ হয়ে গেলো!!!  সতেরো বছরের কিশোরী আসিয়া আক্তার পরবর্তীতে স্বামী’র পরামর্শে ও পেশার প্রয়োজনে নিলুফা আপার সাথে সাক্ষাৎ করে। নিলুফা স্থানীয় এক এনজিও কর্মী, সৎ-আন্তরিক-অভিজ্ঞ। আসিয়া আক্তারের প্রয়োজন ১টা ভ্যান কিনার অর্থ, যা তার স্বামী নিজেই চালাবে। আসিয়া’কে ভর্তি করে নেয়, সদস্য হিসাবে। অল্প অল্প সঞ্চয় জমা করে, একসময় ঋন পরিচালনা’র উপযুক্ত মনে করে এনজিও সংস্থাটি। ঋণ নিয়ে সংসারে কিছুটা আয় বৃদ্ধি’র আশায় স্বামী-স্ত্রী দেখতে থাকে সুখস্বপন। অবশেষে, এনজিও’র টাকায় আসিয়া ভ্যান কিনে দেন স্বামীকে। অন্যের রিকশা টানা বাদ দিয়ে, মজনু শুরু করেন নিজের ভ্যান চালানো। ওদিকে সাপ্তাহিক কেন্দ্র মিটিং-এ আসিয়া’র সাথে পরিচয় হয় স্বপা, নার্গিস, রোকসানা সহ আরো অনেকের। গ্রুপ লিডার স্বপ্না আপা এই কেন্দ্রে সদস্য হিসাবে আছেন প্রায় আট বছর। তাঁর পরিবারের মুদির দোকান – স্বপ্না ও তাঁর স্বামী যৌথভাবে তা পরিচালনা করেন। স্বপ্না আপা শুধু যে বয়সেই সবার সিনিয়র তাই নয় – সামাজিক ও পারিবারিক অনেক বুদ্ধি-পরামর্শও উনি গ্রুপ মিটিং-এ সবার সাথে শেয়ার করেন। লোন আপা নিলুফা’র কাজে অনেক সহযোগীতা আসে স্বপ্না, নার্গিস, রোকসানা’দের বুদ্ধি-পরামর্শ। আর এই সাপ্তাহিক গ্রুপ মিটিং-এই আসিয়া জানতে পারেন তাঁর পেটের প্রথম জীবন ‘মিসক্যারিজ’ হওয়ার সম্ভাব্য কারণ – অল্পবয়সে গর্ভধারন, অপুষ্টি, অতিরিক্ত মানসিক ও শারীরিক চাপ গর্ভধারণের ৪ থেকে পাঁচ মাসের মাথায় গর্ভের ভ্রুণ নষ্ট করে দিতে পারে – যা প্রকারন্তরে ‘মিসক্যারেজ’ বা গর্ভপাত নামে পরিচিত। এনজিও’র এসব সভা থেকে আসিয়া বুঝতে পারেন অল্প বয়সে মা হবার না-না জটিলতার কথা। নিকটতম পারিবারিক স্বাস্থ্যক্লিনিকসহ সরকারী বিভিন্ন কর্মসূচী সম্পর্কেও আসিয়া অনেক কিছু জানতে পারেন এই কেন্দ্রমিটিং থেকেই। বুদ্ধি-পরামর্শগুলি ভ্যানচালক স্বামী’র সাথে শেয়ার করতে ভুল করেন নি। তাঁদের যৌথ শলা-পরামর্শেই আসিয়া দম্পতি’র ঘর আলো করে আসে ছোট্য ‘ইশা খাঁ’, ভ্যান কেনার প্রায় চার বছরের মাথায়।   স্বল্প শিক্ষিত আসিয়া ও অশিক্ষিত স্বামী এবারে বুঝতে ভুল করেন না তাঁদের ভবিষ্যৎ করনীয় কি? ইশা খাঁ’কে পাড়ার স্কুলে ভর্তি’র ব্যাপারে বাবা-মা সজাগ। শিশু ইশাখাঁ’র

Credit Cooperatives

নবদীপ সমাজ উন্নয়ন সংস্থা

Official Announcement: We are pleased to announce that Nobodip Somaj Unnyon Sangstha has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

তিতাস সঞ্চয় ও ঋণদান সমবায় সমিতি লিমিটেড

Official Announcement: We are pleased to announce that Titash Sonccoy O Reen Dan somobay somity Ltd. has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Microfinance Institutions [MFI]

সলিডারিটি ইন্টারন্যাশনাল

Official Announcement: We are pleased to announce that Purnota Khudro Bebshahi Shomobay Shomity has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopMFI247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

কাথুলিয়া ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড

Official Announcement: We are pleased to announce that Kathulia Khudro Beboshai Somobay Somity Ltd has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

ফার্স্ট বাংলা কর্মজীবী সমবায় সমিতি লিমিটেড

Official Announcement: We are pleased to announce that First Bangla Kormojibi Somobay somity Ltd. has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

পরিবর্তন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড

Official Announcement: We are pleased to announce that Poribartan Khudra Bebsayi Somobay Shomity Ltd has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

মীনার স্বপ্ন সঞ্চয় ও ঋণ প্রকল্প

Official Announcement: We are pleased to announce that Meener Shopno Soncoy O Reen Prokolpohas partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

Credit Cooperatives

বিনিময় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি (বিকেবিএসএসএল)

Official Announcement: We are pleased to announce that Binimoy Khudro Byabsayee Samabay Samiti (BKBSSL) has partnered with Swosti Limited to implement Swosti-CoopBank247, Bangladesh’s first fully automated, mobile-based Microfinance & Savings Management Solution. This collaboration will streamline their operations, enhance efficiency, and empower seamless financial management for their institution.

bn_BD
Scroll to Top